মহানবী (সা.) ছিলেন মানবজাতির জন্য সর্বোত্তম আদর্শ। তিনি মুমিনের ইহকালীন ও পরকালীন উভয় জীবনের জন্য আদর্শ। যেমন খাদ্য ও পানীয়। নবীজি (সা.) পরিমিত ও স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করতেন।
তিনি সাহাবিদেরও উপকারী ও স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে উদ্বুদ্ধ করতেন। তিনি তা করেছেন সুষম, সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর খাবারের প্রশংসা করে।
- লাউ : রাসুল (সা.) লাউ খুব পছন্দ করতেন। …
- শসা : আবদুল্লাহ ইবনে জাফর (রা.) বলেন, ‘আমি রাসুল (সা.)- …
- খরবুজ : হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। …
- পিলু ফল : জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত। …
- তরমুজ : ‘রাসুল (সা.) …
- দুধ : রাসুল (সা.) …
- মধু ও মিষ্টি : হজরত আয়েশা (রা.) …
- কালিজিরা : খালিদ ইবনে সাদ (রাযি) থেকে বর্ণিত।
খাদ্যের গুণাগুণ বর্ণনায় নবীজির নীতি
খাদ্যের গুণাগুণ বর্ণনা করার সময় নবীজি (সা.) সর্বদা ভারসাম্য রক্ষা করেছেন। আল্লামা ইবনুল কায়্যিম (রহ.) লেখেন, খাদ্যের ব্যাপারে মহানবী (সা.)-এর নির্দেশনা ও আদর্শ হলো তিনি উপস্থিত খাবার ফিরিয়ে দিতেন না এবং যা নেই তা নিয়ে ভাবতেন না।
কোনো হালাল ও উপাদেয় খাবার তাঁর সামনে উপস্থিত করা হলে তিনি তা গ্রহণ করতেন। খাবার রুচিসম্মত না হলে তা হালাল হলেও গ্রহণ করতেন না। তিনি কখনো খাবারের নিন্দা করতেন না। ভালো মনে হলে খেয়েছেন, না হলে এমনভাবে রেখে দিয়েছেন যেন সেটা তিনি অনভ্যাসবশতই রেখে দিয়েছেন।
নিজের অপছন্দ হলেই তিনি তা উম্মতের জন্য হারাম করেননি। (যাদুল মাআদ, পৃষ্ঠা-৯৫)
যেসব খাবারের প্রশংসা করেছেন
মহানবী (সা.) যেসব খাবারের প্রশংসা করেছেন তার কয়েকটি হলো—
১. খেজুর : রাসুলুল্লাহ (সা.) খেজুর খেতে পছন্দ করতেন। তিনি চাইতেন মুমিনের ঘরে খেজুর থাকুক। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, যে ঘরে খেজুর নেই সে ঘরের লোকেরা অভুক্ত। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ৩৮৩১)
খেজুরের ভেতর ‘আজওয়া’ প্রজাতির খেজুরের বিশেষ প্রশংসা করেছেন নবীজি (সা.)।
তিনি বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সকালে সাতটি আজওয়া খাবে, সেদিন বিষ ও জাদু তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। ’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২০৪৭)
২. সিরকা : খাদ্য ও তরকারি হিসেবে মহানবী (সা.) সিরকার প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘সিরকা কতই না উত্তম তরকারি। ’ (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৩৮২০)
৩. জাইতুনের তেল : জাইতুনের তেলের প্রশংসা করেছেন নবী (সা.)। তিনি বলেন, ‘তোমরা জাইতুনের তেল খাও এবং তা মালিশ করো। কেননা তা বরকতময় বৃক্ষ থেকে উৎপাদিত। ’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১৮৫১)
৪. দুধ : রাসুলে আকরাম (সা.) দুধকে মানব প্রকৃতির অনুকূল খাদ্য বলেছেন। হাদিসে এসেছে, নবী (সা.) মিরাজের রাতের ঘটনা বর্ণনা করে বলেন, ‘অতঃপর আমার সামনে দুটি পেয়ালা আনা হলো। একটিতে দুধ, অপরটিতে শরাব। আমাকে বলা হলো, আপনি যেটি ইচ্ছা গ্রহণ করতে পারেন। আমি দুধের পেয়ালাটি গ্রহণ করলাম আর তা পান করলাম। তখন আমাকে বলা হলো, আপনি ফিতরাত বা স্বভাবকেই গ্রহণ করে নিয়েছেন। আপনি যদি শরাব গ্রহণ করতেন, তবে আপনার উম্মত পথভ্রষ্ট হয়ে যেত। ’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৪৩৭)
৫. সারিদ : মহানবী (সা.) সারিদ খেতে পছন্দ করতেন। তিনি সারিদের প্রশংসা করে বলেন, ‘নারীদের ভেতর আয়েশার মর্যাদা যেমন, খাদ্যের মধ্যে সারিদের মর্যাদা তেমন। ’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৪২৮)
যেসব খাদ্য পছন্দ করতেন
হাদিসে এমন কিছু খাবারের বর্ণনা পাওয়া যায়। যার ব্যাপারে নবীজি (সা.) সরাসরি প্রশংসা না করলেও তিনি তা খেতে পছন্দ করতেন, যা তার প্রশংসারই শামিল। যেমন—
৬. বাহুর গোশত : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জন্য গোশত আনা হলো এবং তাঁকে বাহুর গোশত পরিবেশন করা হলো। তিনি বাহুর গোশতই বেশি পছন্দ করতেন। তিনি তা দাঁত দিয়ে ছিঁড়ে ছিঁড়ে চিবিয়ে খেলেন। (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১৮৩৭)
৭. পনির : আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, তাবুকের ময়দানে নবীজি (সা.)-এর সামনে পনির পেশ করা হলো। তিনি ছুরি চাইলেন এবং বিসমিল্লাহ বলে তা টুকরা টুকরা করলেন। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ১৮১৯)
৮. যবের রুটি : আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিস থেকে বোঝা যায় নবীজি (সা.)-এর পরিবারের সদস্যরা যবের রুটিতে তৃপ্তিবোধ করতেন। তিনি বলেন, মুহাম্মদ (সা.)-এর পরিবার তাঁর মৃত্যুর আগে পরপর দুদিন যবের রুটিতে তৃপ্ত হয়নি। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৯৭০)
৯. মধু : আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) মিষ্টান্ন ও মধু পছন্দ করতেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৫৪৩১)
১০. মাখন : ইবনাই বিসর আল মুসলিমাইন (রা.) থেকে বর্ণিত, তাঁরা উভয়ে বলেন, ‘একবার আমাদের ঘরে রাসুল (সা.) আগমন করেন। আমরা তাঁর সম্মুখে মাখন ও খেজুর পরিবেশন করি। তিনি মাখন ও খেজুর পছন্দ করতেন। ’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস : ১৮৪৩)
রাসুল (সা.) যেসব খাবার পছন্দ করতেন
বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সব অভ্যাস ও আচরণ আমাদের জন্য অনুসরণীয়। তার জীবনযাপনের দিকে খেয়াল করলে দেখা যায়, তার সবকিছুই ছিল স্বাস্থ্যকর। আর তিনি যেসব খাবার খেতে পছন্দ করতেন সেসব খাবারও অনেক পুষ্টিসম্পন্ন। রাসুল (সা.) খেতে পছন্দ করতেন এমন কিছু খাবারের তালিকা উল্লেখ করা হলো।
লাউ : রাসুল (সা.) লাউ খুব পছন্দ করতেন। তিনি তরকারি থেকে লাউয়ের টুকরো বেছে বেছে তুলে খেতেন। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘আমি রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে একটি ভোজে গিয়েছিলাম এবং বাড়ির মালিক জবের রুটি, লাউ ও গোশতের তরকারি পরিবেশন করেন। আমি দেখলাম, রাসুল (সা.) লাউয়ের টুকরো বেছে বেছে খাচ্ছিলেন। তাই সেদিন থেকে আমিও পছন্দের সঙ্গে লাউ খাওয়া শুরু করলাম।’ -(সহিহ বুখারি ৫৩৬) লাউয়ে আছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন সি, বি ও ডি। এছাড়াও এতে ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, ফোলেট, আয়রন ও পটাশিয়ামে ভরপুর। লাউ খেলে শরীর হাইড্রেট থাকে, এতে উচ্চমাত্রার আঁশ মেলে, কোষ্ঠকাঠিন্য, অর্শ, পেট ফাঁপা প্রতিরোধে সাহায্য করে, হজমের সমস্যা দূর করে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতেও সহায়তা করে।
শসা : আবদুল্লাহ ইবনে জাফর (রা.) বলেন, ‘আমি রাসুল (সা.)-কে শসার সঙ্গে খেজুর মিশিয়ে খেতে দেখেছি।’ -(সহিহ মুসলিম ৫৩৩০) শসা পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি সবজি। শসার মধ্যে রয়েছে ভিটামিন কে, ভিটামিন বি, কপার, পটাশিয়াম, ভিটামিন সি ও ম্যাঙ্গানিজ। শসা খেলে পুষ্টির ঘাটতি প্রতিরোধ হয়, বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি রোগের ঝুঁকি কমে, মানসিক চাপ কমায়, ওজন কমায়, মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য ভালো রাখে, হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, হৃদপিণ্ড ভালো রাখে, বিষাক্ত পদার্থ দূর করে, চোখের জ্যোতি বাড়ায় এবং ত্বকবান্ধব খনিজ সরবরাহ করে।
খরবুজ : হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল (সা.) খরবুজ ফল তাজা খেজুরের সঙ্গে একত্রে মিলিয়ে খেতেন এবং বলতেন, আমি এর গরমকে ওর ঠাণ্ডার দ্বারা এবং এর ঠাণ্ডাকে ওর গরমের দ্বারা বিদূরিত করি। -(শামায়েলে তিরমিজি ২০০) খরবুজ হচ্ছে তরমুজ জাতীয় ফল। এই ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ভিটামিন ও খনিজ। এটি ভিটামিন সি ও বিটাক্যারোটিন সমৃদ্ধ এবং বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করে। এটি কিডনির জন্য খুবই ভালো। এছাড়াও খরবুজ চোখের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এতে গ্লাইসেমিক কম থাকে বলে, ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য এটি খুব ভালো। এতে ব্লাড সুগারের পরিমাণ একটি নির্দিষ্ট পর্যায় পর্যন্ত থাকে। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য, মূত্রাশয়ে সংক্রমণ দূর করে।
পিলু ফল : জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘আমরা রাসুল (স.)-এর সঙ্গে মাররুজ জাহরান নামক স্থানে কাবাস (পিলু ফল) কুড়াচ্ছিলাম। রাসুল (সা.) বললেন, তোমাদের শুধু কালোগুলো কুড়ানো উচিত। কেননা এটি খুবই সুস্বাদু। আমি যখন বকরি চরাতাম তখন তা খেতাম।’ -(সহিহ মুসলিম ৫৩৪৯) এই গাছের কচি ডাল দিয়ে মেসওয়াক তৈরি হলেও এর শিকড় থেকে প্রস্তুতকৃত মেসওয়াকই ভালো। এর ভেতর সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়ামসহ আছে দাঁত ও দাঁতের মাড়ির স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষ প্রয়োজনীয় ফ্লোরিন, যার পরিমাণ টুথপেস্টের দ্বিগুণ। অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল ট্রাইক্লোসান ছাড়াও এতে আছে অ্যাস্ট্রিনজেন্ট, যার কারণে রক্ত পড়া বন্ধ হয়। নিয়মিত ব্যবহার করলে ওরাল ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনাও লোপ পায়।
তরমুজ : ‘রাসুল (সা.) আগ্রহের সঙ্গে তরমুজ খেতেন এবং ডালিম ও তুঁত ফলও খেতেন।’ -(মিরআতুল মানাজিহ ৬/৭৯) তরমুজে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন এ ও ভিটামিন সি-এর মতো পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে। এতে ক্যালরির পরিমাণ তুলনামূলক কম। এতে সিট্রুলিন নামের এক ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিড, লাইকোপেন ও কিউকারবিটাসিন ই ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। তরমুজ শক্তি বৃদ্ধি করে, পানিশূন্যতা দূর করে, ত্বক সজীব রাখে, চোখ ভালো রাখে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখে, কিডনি সুস্থ রাখে, শরীরের চর্বি কমায়, ব্যথা নিরাময় ও শরীরের টিস্যু সুরক্ষা করে, স্নায়ু ও মাংসপেশি সুরক্ষা রাখে, হৃদযন্ত্রে রক্ত সঞ্চালন এবং হাড় মজবুত করে।
দুধ : রাসুল (সা.) কখনো খাঁটি দুধ পান করতেন। আবার কখনো দুধের সঙ্গে পানি মিশিয়ে এবং কখনো পানিতে কিশমিশ ও খেজুর মিশিয়ে এর রস পান করতেন। -(সিরাতে মুস্তফা ৫৮৬) দুধে আছে প্রোটিন, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-ডি, ভিটামিন-বি১২, ক্যালসিয়াম, নিয়াসিন, পটাশিয়াম ও ফসফরাস। এসব উপাদান পেশিকে মজবুত ও শক্ত করে। পাশাপাশি শরীরে পুষ্টি জুগিয়ে শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
মধু ও মিষ্টি : হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) মিষ্টি ও মধু পছন্দ করতেন। -(সহিহ বুখারি ৫৪৩১) মধুতে আছে প্রায় ৪৫টি খাদ্য উপাদান, যা শরীরের জন্য খুবই জরুরি। মধুতে ফ্রুক্টোজ, গ্লুকোজ, মন্টোজ, সুক্রোজ, অ্যামাইনো অ্যাসিড, খনিজ লবণ, এনকাইম, ভিটামিন বি১, ভিটামিন বি২, ভিটামিন বি৩, ভিটামিন বি৫, ভিটামিন বি৬, আয়োডিন, জিংক, কপার, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদানসহ আছে আরও বহু কিছু।
কালিজিরা : খালিদ ইবনে সাদ (রাযি) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আয়েশা (রা.) আমাদের কাছে বর্ণনা করেছেন, তিনি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছেন, ‘কালিজিরা মৃত্যু ছাড়া সব রোগের ওষুধ। -(সহিহ বুখারি ৫৬৮৭) কালিজিরাতে রয়েছে ভিটামিন, প্রোটিন, ফাইবার, আয়রন, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসহ নানা উপাদান। আর কালিজিরার রয়েছে বহু উপকারিতা।
Chat On WhatsApp
Please Contact with us for more details.
Our Services
Phone : +8801566058831
WhatsApp :�wa.me/8801933307999
Skype : azadarch
Our Website : www.azadservice.com
Telegram for more information : https://t.me/Azadservice
Email US : [email protected]
Youtube :� https://www.youtube.com/@DropshippingService?sub_confirmation=1
Virtual Assistant : www.azadservice.com/category/virtual-assistant/
Facebook Groups : https://www.facebook.com/groups/854505676275341/
Facebook Page : https://www.facebook.com/independentservice.today
Linkdin :� https://www.linkedin.com/in/azadservice/
Instagram : https://www.instagram.com/azadservicebd/
Pinterest : https://www.pinterest.com/azadservice/
Twitter.: https://twitter.com/azadservicebd
Tiktok : https://www.tiktok.com/@azadservices
+ There are no comments
Add yours