ইসলামে চুপ থাকার প্রতিদান
কথা বলা মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য। তবে কথার কারণে মানুষ নানা সমস্যায় পড়ে। মানুষের সব কার্যক্রমের মতো কথাও সংরক্ষণ করা হয়। ইরশাদ হয়েছে, ‘মানুষ যে কথাই উচ্চারণ করে তার জন্য তৎপর প্রহরী তার কাছেই রয়েছে।’ (সুরা : কাফ, আয়াত : ১৮)
পবিত্র কোরআনে সুন্দর কথাকে মুমিনের বৈশিষ্ট্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘রহমানের বান্দা তাঁরা, যাঁরা জমিনে নম্রভাবে বিচরণ করেন এবং অজ্ঞলোক যখন তাঁদের লক্ষ্য করে কথা বলেন, তখন তাঁরা শান্তিপূর্ণ কথা বলেন। ’ (সুরা : ফুরকান, আয়াত : ৬৩)
জ্ঞানীরা কম কথা বলেন। তাই প্রবাদ আছে, মানুষের বুদ্ধি পূর্ণতা পেলে কথা কমে যায়, বরং কম কথা বলা ব্যক্তিরা সমাজে বিশেষ মর্যাদা লাভ করেন। ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেন, যে নীরবতা অবলম্বন করে সে মুক্তি পায়। (তিরমিজি, হাদিস : ২৪৮৫)
জিহ্বা সংযত রাখার মাধ্যমে মুমিনের ঈমান পূর্ণতা লাভ করে। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘বান্দার ঈমান স্থির হয় না, যতক্ষণ না তার অন্তর স্থির হয়। আর তার অন্তর স্থির হয় না, যতক্ষণ না তার জিহ্বা স্থির হয়। কেউ জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না, যতক্ষণ না তার প্রতিবেশী তার অনিষ্টতা থেকে নিরাপদ থাকে। ’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ১৩০৪৮)
তা ছাড়া কম কথা বলা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের অন্যতম উপায়। ইবনে আমর (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেন, যে নীরবতা অবলম্বন করে সে মুক্তি পায়।
(তিরমিজি, হাদিস : ২৪৮৫)
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেন, ‘নিশ্চয়ই বান্দা কখনো কখনো আল্লাহর সন্তুষ্টিমূলক এমন কথা বলে, যার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা তার সম্মান বৃদ্ধি করে দেন। আবার কখনো কখনো বান্দা আল্লাহর অসন্তুষ্টিমূলক এমন কথা বলে, যার পরিণতি সম্পর্কে তার কোনো ধারণাই নেই, অথচ ওই কথার কারণে সে জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে। ’ (বুখারি, হাদিস: ৬৪৭৮)
একদা সিমাক (রহ.) জাবের ইবনে সামুরা (রা.)-কে জিজ্ঞেস করেন, আপনি কি রাসুল (সা.)-এর সাহচর্যে ছিলেন? তিনি বলেন, হ্যাঁ। রাসুল (সা.) বেশির ভাগ সময় নীরব থাকতেন। খুব কম হাসতেন…। (আহমদ, হাদিস : ৬৩০৮)
জিহ্বার অপব্যবহারের ফলে অনেক অপরাধ ও গুনাহের দ্বার খুলে যায়। গালমন্দ, গিবত, পরনিন্দা ও মিথ্যা বলা সবই জিহ্বার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। হাদিসের ভাষ্যমতে, এসব কিছু জাহান্নামের পথকে সুগম করে দেয়। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত একদা রাসুল (সা.)-কে প্রশ্ন করা হলো ‘কোন কাজটি বেশি পরিমাণে মানুষকে জান্নাতে নিয়ে যাবে? তিনি বললেন, আল্লাহভীতি, ভালো আচরণ ও উত্তম চরিত্র। রাসুল (সা.)-কে আবার প্রশ্ন করা হলো কোন কাজ বেশি পরিমাণে মানুষকে জাহান্নামে নিয়ে যাবে? তিনি বললেন, মুখ ও লজ্জাস্থান। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ২০০৪)kj
চুপ থাকা যখন শ্রেষ্ঠ ইবাদত
বাকশক্তি আল্লাহর দেওয়া অন্যতম বড় নেয়ামত। এই নেয়ামতের কদর করে কথা বলতে হবে— জেনে-বুঝে ও হিসাব করে। মুখ আছে বলেই সব কথা বলা যাবে না। কারণ, মানুষের প্রতিটি কাজ-কর্ম ও কথা লিপিবদ্ধ করা হয়। দায়িত্বপ্রাপ্ত ফেরেশতা তা রেকর্ড করে নেয়। তাতে কোনো গুনাহ থাকুক বা না থাকুক।
আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘মানুষ যে কথাই উচ্চারণ করে তা লিপিবদ্ধ করার জন্য তৎপর প্রহরী তার সঙ্গেই রয়েছে।’ (সুরা কাফ, আয়াত : ১৮)
তাই কথা বললে— সবসময় উত্তম ও কল্যাণকর কথা বলার চেষ্টা করতে হবে। যদি উত্তম কথা বলার উদ্দেশ্য বজায় রাখা সম্ভব না হয়, তবে চুপ থাকা ভালো। এটা একটি ইবাদত ও উত্তম কাজ।
শায়খ বকর ইবনে আবদুল্লাহ আল-মুজানি (রহ.)-কে চুপ থাকা নিয়ে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল— আপনি এত দীর্ঘ সময় চুপ থাকেন কেন? তিনি জবাব দেন, আমার জিহ্বা হিংস্র একটা জীবের মতো— যদি আমি ছেড়ে দিই; তাহলে এটা আমাকে খেয়ে ফেলবে। (বাহজাতুল মাজালিস: ০১/১১)
ঈমানদার ব্যক্তি অনর্থক কথা বলে না
আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে আল্লাহ ও পরকালের ওপর ঈমান রাখে, সে যেন উত্তম কথা বলে; নতুবা চুপ থাকে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১০২)
আবু হুরাইরা (রা.) হতে বর্ণিত হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি বিশ্বাস রাখে, সে যেন ভাল কথা বলে; নচেৎ চুপ থাকে।’ (বুখারি, হাদিস : ৬০১৮; মুসলিম, হাদিস : ১৮২)
আবু মুসা (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘হে আল্লাহর রাসুল! সর্বোত্তম মুসলিম কে?’ তিনি বললেন, যার জিহ্বা ও হাত থেকে মুসলিমরা নিরাপদ থাকে। (বুখারি, হাদিস : ১১, মুসলিম, হাদিস : ১৭২)
অযথা কথা না বলা জান্নাতে প্রবেশের মাধ্যম
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) মহানবী (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! শ্রেষ্ঠ আমল কী?’ তিনি উত্তরে বললেন, যথা সময়ে নামায পড়া। অতঃপর জিজ্ঞাসা করেন যে, ‘তারপর কী? হে আল্লাহর রাসুল!’ তিনি বললেন, তোমার জিহবা থেকে লোককে নিরাপদে রাখা।’ (তাবারানি, হাদিস : ২৮৫২)
আবু আবদুর রহমান বিলাল ইবনে হারেস মুজানি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘মানুষ আল্লাহ তাআলার সন্তোষমূলক এমন কথা বলে, আর সে কল্পনাও করে না যে, তা কোথায় গিয়ে পৌঁছবে, আল্লাহ তার দরুন তার সাক্ষাতের দিন পর্যন্ত তার জন্য সন্তুষ্টি লিখে দেন। পক্ষান্তরে মানুষ আল্লাহ তাআলার অসন্তোষমূলক এমন কথা বলে, আর সে কল্পনাও করে না যে, তা কোথায় গিয়ে পৌঁছবে, আল্লাহ তার দরুন তার সাক্ষাতের দিন পর্যন্ত তার জন্য অসন্তুষ্টি লিখে দেন। (মালিক, হাদিস : ২৬৫; আহমাদ, হাদিস : ১৫৮৫২; তিরমিজি, হাদিস : ২৩১৯; ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩৯৬৯; ইবনে হিব্বান, হাদিস : ২৮০; সিলসিলাতুস সহিহাহ, হাদিস : ৮৮৮)
সাহল ইবনে সাদ (রা.) হতে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি দুই চোয়ালের মধ্যবর্তী (অঙ্গ জিভ) এবং দুই পায়ের মধ্যবর্তী (অঙ্গ গুপ্তাঙ্গ) সম্বন্ধে নিশ্চয়তা দেবে, আমি তার জন্য জান্নাতের নিশ্চয়তা দেবো।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৪৭৪; (তিরমিজি, হাদিস : ২৪০৯)
Chat On WhatsApp
Please Contact with us for more details.
Our Services
Phone : +8801566058831
WhatsApp :�wa.me/8801933307999
Skype : azadarch
Our Website : www.azadservice.com
Telegram for more information : https://t.me/Azadservice
Email US : [email protected]
Youtube :� https://www.youtube.com/@DropshippingService?sub_confirmation=1
Virtual Assistant : www.azadservice.com/category/virtual-assistant/
Facebook Groups : https://www.facebook.com/groups/854505676275341/
Facebook Page : https://www.facebook.com/independentservice.today
Linkdin :� https://www.linkedin.com/in/azadservice/
Instagram : https://www.instagram.com/azadservicebd/
Pinterest : https://www.pinterest.com/azadservice/
Twitter.: https://twitter.com/azadservicebd
Tiktok : https://www.tiktok.com/@azadservices
+ There are no comments
Add yours