আল্লাহকে পাওয়ার সহজ উপায় | যে দুই উপায়ে আল্লাহর সঙ্গে বান্দার সুসম্পর্ক তৈরি হয়

Estimated read time 1 min read

আল্লাহকে পাওয়ার সহজ উপায়

আল্লাহকে পাওয়ার জন্য কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন নেই বা কাউকে ধরাও আবশ্যক নয়। আল্লাহ বান্দার খুব কাছে অবস্থান করেন। তাঁর নিজের উক্তি, ‘হে নবী! আমার বান্দা যখন আমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে তখন বলে দাও, আমি তাদের অতি কাছে। যে আমাকে ডাকে আমি তার ডাক শুনি এবং জবাব দেই, কাজেই আমার আহবানে সাড়া দেয়া ও আমার ওপর ঈমান আনা তাদের একান্ত কর্তব্য। এ কথা তুমি তাদের শুনিয়ে দাও, হয়তোবা তারা সত্য-সরল পথের সন্ধান পাবে’- বাকারা ১৮৬। দ্ব্যর্থহীন কথা, আল্লাহর সাথে বান্দার সম্পর্ক প্রত্যক্ষ। সব প্রয়োজন তাঁর কাছে নিবেদন করতে হবে। তিনি বান্দার ডাক শুধু শুনেনই না, তার জবাবও দেন অর্থাৎ সমাধান দেন। আল্লাহরও চাওয়া আছে এবং তা হলো বান্দা কেবল তাঁর আনুগত্য (ইবাদত) করবে। আল্লাহ তাঁর রাসূল সা.-কে বলে দিয়েছেন, তাঁর এ কথা প্রচার করে দিতে যাতে তারা শিরক থেকে মুক্ত হয়ে সঠিক পথের সন্ধান পায়।

আল্লাহকে পাওয়ার সহজতম উপায় হলো তাঁর বান্দাদের সাথে সদাচরণ করা। মনে রাখতে হবে মানুষ শুধু আল্লাহর বান্দা নয়, সাথে সাথে তাঁর প্রতিনিধি। আমরা প্রতিনিধির মর্যাদা বুঝি, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাই সরকারের প্রতিনিধি। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর কাজকর্মে বাধা প্রদান সরকারের বিরোধিতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। পুলিশ প্রায়ই তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে থাকে। তাই আল্লাহর প্রিয় বান্দা হতে হলে তাঁর পুরো সৃষ্টির সাথে সদাচার করতে হবে। সদাচরণ প্রসঙ্গে আল্লাহর বাণী, ‘নিশ্চিত ধ্বংস তাদের জন্য যারা মানুষকে সামনাসামনি গালাগাল করে ও পেছনে দোষ প্রচার করে’ (সূরা হুমাজা)। এদের শাস্তির কথা বলা হয়েছে যে, তাদের হুতামায় নিক্ষেপ করা হবে। আর হুতামার পরিচয় দেয়া হয়েছে, আল্লাহর আগুন প্রচণ্ডভাবে উত্তপ্ত-উৎক্ষিপ্ত। একটু গালি দিলে ও অসাক্ষাতে নিন্দাবাদ করলে যদি এ পরিণতি হয় তাহলে যারা গুম-খুন ও মামলা-মোকদ্দমা দিয়ে মানুষকে জেল-জুলুম ও নানাভাবে কষ্ট দেয়; তাদের পরিণতি কী হবে? আসলে আল্লাহর দয়া অনুগ্রহের শেষ নেই, তিনি অপেক্ষা করেন তাঁর বান্দারা ফিরে আসে কি না? ঈমানদার বান্দাদের কষ্ট দেয়া আল্লাহর কাছে অসহনীয়। আল্লাহর বাণী, ‘যারা ঈমানদার নর-নারীকে কষ্ট দেয়, অতঃপর তওবা করে না তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আজাব, আছে ভস্ম হওয়ার শাস্তি’ (সুরা বুরুজ)। ‘অতঃপর তওবা করে না’- এ উক্তির মধ্যে একজন জালেম আল্লাহর ক্ষমা আশা করতে পারে যদি সে অনুতপ্ত হয়ে ফিরে আসে।

আমাদের স্মরণে রাখা আবশ্যক, কোনো মুসলিম দ্বারা কেউ কষ্ট পাবে সেটি অকল্পনীয়। বরং মানবজাতির কল্যাণ সাধনের লক্ষ্যে মুসলিম জাতির উদ্ভব হয়েছে। আল্লাহর বাণী, ‘তোমরা সর্বোত্তম জাতি, সমগ্র মানবজাতির কল্যাণে তোমাদের বের করে আনা হয়েছে, তোমরা দুনিয়ার মানুষদের সৎ কাজের আদেশ দেবে এবং অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখবে এবং আল্লাহর ওপর অবিচল আস্থা রাখবে’- সূরা আলে ইমরান ১১০। এতে বোঝা যায়, মুসলিমদের শ্রেষ্ঠত্বের মূলে রয়েছে মানুষের কল্যাণ সাধন এবং সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখার নির্দেশ প্রদানের মধ্যে। সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখা তাদের পক্ষে সম্ভব যারা নেতৃত্বের আসনে থাকে। এ আয়াতের মাধ্যমে উপলব্ধি করা যায় যে, আল্লাহ তাঁর সর্বোত্তম বান্দাদের (মুসলিম) বিশ্ব নেতৃত্বের আসনে দেখতে চান।

তাই বলা যায়, রাজনৈতিক নেতৃত্ব আসে লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। আল্লাহ সব নবী-রাসূলকে সমসাময়িক রাজশক্তির বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়েছেন। কালেমা তাইয়্যেবাহ (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ) এক বিপ্লবাত্মক স্লোগান। সব নবী-রাসূল একই কালেমার দাওয়াত দিয়েছেন। কালেমার দাবি হলো, আল্লাহর আনুগত্য করো এবং তাগুত অস্বীকার করো। তাগুতকে অস্বীকার মানে নিরন্তর সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়া। সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী নবী-রাসূলদের কোনো তাগুত সহ্য করেনি। নমরুদ সহ্য করেনি ইবরাহিম আ:-কে, ফেরাউন সহ্য করেনি মুসা আ:-কে, আর মুহাম্মদ সা:-কে সহ্য করেনি আবু জেহেল ও আবু লাহাবরা। দুনিয়ার ইতিহাস হলো হক ও বাতিলের দ্বন্দ্ব-সংগ্রামের ইতিহাস। মহান আল্লাহর বাণী, ‘আর সংগ্রাম করো আল্লাহর পথে হক আদায় করে। তিনি (দুনিয়ার নেতৃত্বের জন্য) তোমাদের মনোনীত করেছেন এবং দীনের ব্যাপারে কোনো সঙ্কীর্ণতা রাখেননি’- সূরা হজ ৭৮। কুরআনে অসংখ্য জায়গায় জিহাদ ফি সাবিলিল্লাহ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে হক আদায় করে অর্থাৎ নিজের জান ও মাল উজাড় করে দিয়ে। নিজেকে পরিপূর্ণ আল্লাহতে সমর্পণ করে।

আল্লাহ মুসলমানদের সর্বোত্তম জাতি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। সর্বোত্তম জাতি হওয়া তখনই সম্ভব যখন তাদের হাতে সমাজ ও রাষ্ট্রের নেতৃত্ব থাকে এবং মানুষ সেখান থেকে শুধু কল্যাণ লাভ করে এবং সমাজ থেকে সব ধরনের পাপাচার দূর হয়। মুসলমান আল্লাহর বাছাই করা বা মনোনীত বান্দা। আল্লাহ সমাজের নেতৃত্ব তাঁর এ মনোনীত বান্দাদের হাতে দিতে চান। সেখানে শর্ত হলো-ঈমানের দাবিতে সত্যবাদী হতে হবে ও নেক আমলে ভূষিত হতে হবে (সূরা নূর ৫৫)। এখানে নেক আমল অর্থাৎ নফল ইবাদত-বন্দেগিতে শুধু পারদর্শী হওয়া নয় বরং সততা, বিশ্বস্ততা, আমানতদারিতা, প্রতিশ্রুতি পালন, সৃষ্টির প্রতি সদাচরণসহ বহুবিধ মানবিক গুণের অধিকারী হওয়া। এগুলো হলো মৌলিক মানবীয় গুণ। এসব মানবীয় গুণাবলি কোনো একটি জাতিগোষ্ঠী অর্জন করতে পারলে তাদের রোখার সাধ্য কারো থাকে না। আল্লাহ বলেছেন, তাঁর দ্বীনের মধ্যে কোনো সঙ্কীর্ণতা নেই। দুর্ভাগ্য, আজ আমরা আমাদের উদার ও প্রশস্ত দ্বীনকে সঙ্কীর্ণ করে পরস্পর হিংসাবিদ্বেষে মেতে উঠেছি ও নানা দল-উপদলে বিভক্ত হয়েছি। আল্লাহ আমাদের সঠিক উপলব্ধি দান করুন।

লেখক : সরকারি কলেজের প্রাক্তন অধ্যাপক

যে দুই উপায়ে আল্লাহর সঙ্গে বান্দার সুসম্পর্ক তৈরি হয়

আল্লাহ তাআলার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতে হলে দুইটি বিষয়ের উপর আমল করতে হবে। আল্লাহকে বেশি বেশি ভয় করার পাশাপাশি সত্যবাদী-পরহেজগার ব্যক্তির সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা। আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে এ প্রসঙ্গে ইরশাদ করেন-

‘হে ঈমানদারগণ, আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সঙ্গে থাক।’ (সুরা তাওবা : আয়াত ১১৯)

একটি হলো : তাকওয়া বা মহান আল্লাহর ভয়।
দ্বিতীয় টি হলো : সত্যবাদীদের সঙ্গী হওয়া।

দুনিয়ার প্রতিটি কাজে যেমন আল্লাহ তাআলাকে বেশি বেশি ভয় করতে হবে। তেমিন আল্লাহকে যারা বেশি বেশি ভয় করে সাদেকিন বা সত্যবাদী তাদের সঙ্গেও সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে। তবেই সম্ভব মহান আল্লাহর সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করা। হাদিসে পাকে এসেছে-

হজরত আনাস ইবনে মালেক রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, ‘এক বেদুঈন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘কেয়ামত কবে (সংঘটিত হবে)? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে (পাল্টা প্রশ্ন করে) বললেন, ‘তুমি তার (কেয়ামতের) জন্য পাথেয় সঞ্চয় করেছ কি? সে বলল, ‘ আল্লাহ ও তার রাসুলের ভালোবাসা।’ তিনি বললেন, ‘তুমি তারই সঙ্গেী হবে যাকে তুমি ভালোবাস।’

সুতরাং মুমিন বান্দা আল্লাহর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য বেশি বেশি আল্লাহ তাআলাকে ভয় করবে। ভালোবাসা মিশ্রিত ভয়। যে ভালোবাসা মিশ্রিত ভয় ও তার প্রাপ্তির কথা আল্লাহ তাআলা নিজেই কুরআনে ঘোষণা করেছেন-

‘আল্লাহকে ভয়কারীদের অদূরে জান্নাতকে উপস্থিত করা হবে। তোমাদের প্রত্যেক অনুরাগী ও স্মরণকারীকে এরই প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল। যে ব্যক্তি দয়াময় আল্লাহকে না দেখে (ভালোবেসে) ভয় করে এবং তার কাছে বিনীত অন্তরে উপস্থিত হয়।’ (সুরা কাফ : আয়াত ৩১-৩৩)

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত সব কাজে আল্লাহকে বেশি বেশি ভালোবাসা মিশ্রিত ভয় করা। আর যারা আল্লাহকে ভয় করে সেসব সত্যবাদীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা। তাহলেই মহান আল্লাহর সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করা সম্ভব।
জাগোনিউজের খবর পেতে ফলো করুন আমাদের গুগল নিউজ চ্যানেল।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআন এবং হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আল্লাহকে বেশি বেশি ভয় করার তাওফিক দান করুন। যারা একনিষ্ঠভাবে আল্লাহকে ভয় করে সেসব মুখলিস বান্দাদের সঙ্গে সুসম্পক তৈরি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Chat On WhatsApp

Please Contact with us for more details.
Our Services

Phone : +8801566058831
WhatsApp :�wa.me/8801933307999
Skype : azadarch
Our Website : www.azadservice.com
Telegram for more information : https://t.me/Azadservice
Email US : [email protected]
Youtube :� https://www.youtube.com/@DropshippingService?sub_confirmation=1
Virtual Assistant : www.azadservice.com/category/virtual-assistant/
Facebook Groups : https://www.facebook.com/groups/854505676275341/
Facebook Page : https://www.facebook.com/independentservice.today
Linkdin :� https://www.linkedin.com/in/azadservice/
Instagram : https://www.instagram.com/azadservicebd/

Pinterest : https://www.pinterest.com/azadservice/

Twitter.: https://twitter.com/azadservicebd

Tiktok : https://www.tiktok.com/@azadservices

You May Also Like

More From Author

+ There are no comments

Add yours