মহান আল্লাহ যাদের ভালোবাসেন
সাধ্যমতো মানুষের উপকার করতে চেষ্টা করা মুমিনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। মুমিন সর্বদা অন্যের কল্যাণকামী হয়। কেউ বিপদে পড়লে তাকে উদ্ধার করতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ফলে মহান আল্লাহও তাদের প্রতি দয়া করেন।
তাদের দুনিয়া ও আখিরাতের জীবনকে সহজ করে দেন। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহ তাঁর দয়ালু বান্দাদের ওপরই দয়া করেন। ’ (বুখারি, হাদিস : ৭৪৪৮)
অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমকে দুনিয়ার বিপদসমূহের মধ্যকার কোনো বিপদ থেকে রক্ষা করবে, এর প্রতিদানে আল্লাহ কিয়ামতের দিনের বিপদসমূহের কোনো বিপদ থেকে তাকে রক্ষা করবেন। আর যে ব্যক্তি কোনো গরিব লোকের সঙ্গে (পাওনা আদায়ে) নম্র ব্যবহার করবে, আল্লাহ তার সঙ্গে দুনিয়া ও আখিরাতে উভয় স্থানে নম্র ব্যবহার করবেন।
যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের দোষত্রুটি গোপন করে রাখবে, আল্লাহও তার দোষত্রুটি দুনিয়া ও আখিরাতে উভয় স্থানে গোপন রাখবেন। বান্দা যতক্ষণ তার ভাইয়ের সাহায্য করে, আল্লাহও ততক্ষণ তাঁর বান্দার সাহায্য করেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯৪৬)
অন্যদিকে যারা সামান্য ক্ষমতা পেয়ে অন্যের ওপর অত্যাচার করে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে।
অন্যকে কষ্ট দেয়। মহান আল্লাহ তাদের জন্য শাস্তির ব্যবস্থা করে রেখেছেন। হিশাম (রা.)-এর পিতা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একবার হিশাম ইবনে হাকিম ইবনু হিযাম সিরিয়ার কৃষকদের কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন। এদের কঠিন রোদে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল। তিনি বলেন, এদের কী হয়েছে? তারা বলল, জিযয়ার জন্য এদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অতঃপর হিশাম বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আমি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা তাদের সাজা দেবেন, যারা পৃথিবীতে (অন্যায়ভাবে) মানুষকে সাজা দেয়। (মুসলিম, হাদিস : ৬৫৫২)
তাই আমাদের উচিত মহান আল্লাহর রহমতের আশায় অন্যের প্রতি দয়া করা, অন্যকে সহযোগিতা করতে চেষ্টা করা। সর্বদা মানুষের কল্যাণকামী হওয়া। কাউকে বিপদে না ফেলে বরং বিপদ থেকে রক্ষা করার আপ্রাণ চেষ্টা করা। তাহলে মহান আল্লাহও আমাদের ক্ষমা করে দেবেন। আবু হুরায়রা (রা.) সূত্রে নবী (সা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, জনৈক ব্যবসায়ী লোকদের ঋণ দিত। কোনো অভাবগ্রস্তকে দেখলে সে তার কর্মচারীদের বলত, তাকে ক্ষমা করে দাও, হয়তো আল্লাহ তাআলা আমাদের ক্ষমা করে দেবেন। এর ফলে আল্লাহ তাআলা তাকে ক্ষমা করে দেন। (বুখারি, হাদিস : ২০৭৮)
মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে কল্যাণকামী হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
যেসব ব্যক্তিকে আল্লাহ সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন
দুনিয়াতে প্রতিটি মানুষই জনপ্রিয় ব্যক্তি ও ভালোবাসার মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে চায়। মানুষ তাকে ভালোবাসুক, শ্রদ্ধা করুক, সম্মান করুক; সেটিই চায়। আবার যারা বড় বড় দায়িত্বশীল বা ক্ষমতাধর ব্যক্তি- তাদের আনুকূল্য কিংবা আস্থাভাজনও হতে চায় মানুষ। আর এ দুইটি বিষয়ে আস্থা অর্জন করতে পারলেই মানুষ দুনিয়ায় অনেক সুবিধা ভোগ করতে পারবে। আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমে বান্দার সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ার কথা বলেছেন এভাবে-
وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اَشَدُّ حُبًّا لِّلّٰ
আর যারা মুমিন আল্লাহর সঙ্গে তাদের ভালবাসা প্রগাঢ়।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৬৫)
সুতরাং মুমিন বান্দার লোভ-লালসা, চাওয়া-পাওয়া ও কামনা-বাসনা হওয়া উচিত- আল্লাহ তাআলার সবচেয়ে বেশি নৈকট্য পাওয়া। আল্লাহ তাআলার সবচেয়ে বেশি ভালোবাসা পাওয়ার চেষ্টাকে প্রাধান্য দেওয়া। আর আল্লাহ তাআলার ভালোবাসা পাওয়া মুমিন বান্দার ঈমানি দায়িত্বও বটে। কুরআনুল কারিমের একাধিক আয়াতে আল্লাহ তাআলা তার ভালোবাসা পাওয়ার উপায় তুলে ধরেছেন। আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়ার সেসব উপায়গুলো কী?
আল্লাহ তাআলা যাদের বেশি ভালোবাসেন
মহান আল্লাহ তাআলা বান্দাকে কোন কাজে বেশি ভালোবাসবেন, কোন কাজে রহমত নাজিল করবেন; কোন কাজে অভিশাপ দেন, রহমত থেকে বঞ্চিত করেন তা-ও জানতে হবে। সে অনুযায়ী আমল করা মুমিনের একান্ত কাজ। আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমের বিভিন্ন আয়াতে তা সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন-
তাওবাকারী
যারা আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি তাওবাহ করে, আল্লাহ তাআলা তাদেরকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-
اِنَّ اللّٰهَ یُحِبُّ التَّوَّابِیۡنَ
‘নিশ্চয় আল্লাহ তাওবাকারীদেরকে ভালবাসেন।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ২২২)
এ তাওবার মর্মার্থ কি? মানুষ প্রতিনিয়ত-অহরহ গোনাহ করে থাকে। আর এ গোনাহ থেকে ফিরে আসা কিংবা বিরত থাকা। অতীত জীবনে যেসব গোনাহ হয়েছে, আল্লাহর কাছে সেসব গোনাহকে অপরাধ হিসেবে স্বীকার করে এ অপরাধ বা গোনাহের জন্য অনুতপ্ত হওয়া; এ অন্যায়-অপরাধ না করার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করার নামই হলো তাওবাহ।
যারাই এ প্রতিজ্ঞা করে গোনাহ থেকে ফিরে আসে বা গোনাহ থেকে বিরত থাকে। আল্লাহ তাআলা এসব তাওবাকারীকেই সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন। আর এ তাওবাহ কোনগুলো-
أَستَغْفِرُ اللهَ
উচ্চারণ : ‘আস্তাগফিরুল্লাহ।’
অর্থ : আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি।
أَسْتَغْفِرُ اللهَ وَأَتُوْبُ إِلَيْهِ
উচ্চারণ : ‘আস্তাগফিরুল্লাহা ওয়া আতুবু ইলাইহি।‘
অর্থ : আমি আল্লাহর ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তাঁর দিকেই ফিরে আসছি।
رَبِّ اغْفِرْ لِيْ وَتُبْ عَلَيَّ إِنَّكَ (أنْتَ) التَّوَّابُ الرَّحِيْمُ
উচ্চারণ : ‘রাব্বিগ্ ফিরলি ওয়া তুব আলাইয়্যা ইন্নাকা (আংতাত) তাওয়্যাবুর রাহিম।’
অর্থ : ‘হে আমার প্রভু! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন এবং আমার তাওবাহ কবুল করুন। নিশ্চয় আপনি মহান তাওবা কবুলকারী করুণাময়।’
২. রাসুল্লাহর অনুসরণকারী
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসরণ ও অনুকরণকারীকে মহান আল্লাহ ভালোবাসেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-
قُلۡ اِنۡ کُنۡتُمۡ تُحِبُّوۡنَ اللّٰهَ فَاتَّبِعُوۡنِیۡ یُحۡبِبۡکُمُ اللّٰهُ وَ یَغۡفِرۡ لَکُمۡ ذُنُوۡبَکُمۡ ؕ وَ اللّٰهُ غَفُوۡرٌ رَّحِیۡمٌ
‘(হে রাসুল! আপনি) বলে দিন, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসতে চাও, তবে আমার অনুসরণ কর; তবেই আল্লাহ তোমাদের ভালবাসবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা ইমরান : আয়াত ৩১)
অর্থা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরতে পারলে, জীবনের প্রতিটি দিক-বিভাগে তাঁর আনুগত্য ও অনুসরণ করতে পারলেই মহান আল্লাহ তাআলা বান্দাকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসবেন।
৩. পবিত্রতা অর্জনকারী
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- আল্লাহ তাআলা পবিত্র; তিনি পবিত্রতা অর্জনকারীকে ভালোবাসেন। এ পবিত্রতা শুধু শারীরিক পবিত্রতাই নয়, বরং এ পবিত্রতা হচ্ছে জীবনের প্রতিটি দিক ও বিভাগে শারীরিক, মানসিক, আদর্শিক; লেন-দেন, কথা-বার্তা ও আচার-আচরণসহ সব ধরনের পবিত্রতা অর্জনকারীকে মহান আল্লাহ ভালোবাসেন। আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমেও এ কথার ঘোষণা এভাবে দিয়েছেন-
وَ یُحِبُّ الۡمُتَطَهِّرِیۡنَ
‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ভালবাসেন অধিক পবিত্রতা অর্জনকারীদেরকে।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ২২২)
৪. দানকারী
আল্লাহ তাআলা সব মানুষকে নেয়ামত দান করেন। দুনিয়ার দানে আল্লাহ বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী কাউকে নেয়ামত দানে আলাদা করেন না। দান করা মহান আল্লাহর গুণ। যারা আল্লাহর এ গুণের অনুসরণে দান করবে; আল্লাহ তাদের সবচেয়ে বেশি ভালোবাসবেন।
মানুষের কষ্ট লাগবে যার যে সম্পদ আছে, তা নিয়ে সামর্থ্য অনুযায়ী দুয়ারে দুয়ারে হাজির হয়ে দান করবে; মহান আল্লাহ তাআলা তাদের ভালোবাসবেন। হাদিসের আরো এসেছে-
إن الله جواد يُحبُّ الجود
যারা দানবীর; দানশীলতাকে যারা অগ্রাধিকার দেবে; নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা তাদের মহব্বত করেন। সুতরাং যারা দুর্দিনে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে দান করবে; আল্লাহর রাস্তায় অকাতরে দান করবে; আল্লাহ তাআলা তাদের ভালোবাসেন।
৫. ন্যায়বিচারকারী
ন্যায়বিচারকারীকে মহান আল্লাহ তাআলা ভালোবাসেন। এ কারণেই মানুষের প্রতি ন্যায় বিচার করার নির্দেশ দিয়েছেন এভাবে-
وَ اَقۡسِطُوۡا ؕ اِنَّ اللّٰهَ یُحِبُّ الۡمُقۡسِطِیۡنَ
‘আর তোমরা ন্যায়বিচার কর। নিশ্চয় আল্লাহ ন্যায়বিচারকারীদের ভালবাসেন।’ (সুরা হুজরাত : আয়াত ৯)
এখন প্রশ্ন হলো- এ ন্যায়বিচার কি শুধু বিচারকই করবে? নাকি অন্য কেউ এ দায়িত্ব পালন করবে? সহজভাবে বলা যায়-
জবাবদিহিতার প্রশ্ন যাদের কাছে আসে, তারা সবাই নিজ নিজ ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবে, জাস্টিজ মেইনটেন করতে হবে; তবেই আল্লাহ তাআলা তাদের ভালোবাসবেন।
তা হতে পারে সে শিক্ষকের ক্ষেত্রে, হতে পারে পরিবারের কর্তার ক্ষেত্রে, হতে পারে মসজিদে ইমামের ক্ষেত্রে। শিক্ষক তার ছাত্রের প্রতি ন্যায়বিচার করবে; পরিবারের কর্তা তার স্ত্রী-সন্তান ও আত্মীয়-স্বজনের প্রতি দায়িত্ব পালন করবে; মসজিদে ইমাম তার মুসল্লি বা মক্তাদির প্রতি যধাযথ দায়িত্ব পালন করবে। দায়িত্বশীল যে-ই হোক না কেন, দায়িত্ব পালনের সবক্ষেত্রে সঠিক জবাবদিহিতার প্রশ্নে ন্যায়বিচার বা জাস্টিজ মেইনটেন করতে পারলেই; সবার সঙ্গে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করতে পারলেই কেবল সম্ভব মহান আল্লাহর ভালোবাসায় ধন্য হওয়া। তবেই তাদের সঙ্গে মহান আল্লাহর ভালোবাসা হবে প্রগাঢ়।
৬. আল্লাহর প্রতি ভরসাকারী
সব কাজ নিয়ম মেনে করার পাশাপাশি আল্লাহর ওপর ভরসা করতে হবে। আল্লাহর প্রতি নির্ভরশীল হতে হবে। যারা সর্বাবস্থায় মহান আল্লাহর ওপর ভরসা করেন, মহান আল্লাহ তাআলা তাদের ভালোবাসেন মর্মে কুরআনে এভাবে ঘোষণা দিয়েছেন-
فَاِذَا عَزَمۡتَ فَتَوَکَّلۡ عَلَی اللّٰهِ ؕ اِنَّ اللّٰهَ یُحِبُّ الۡمُتَوَکِّلِیۡنَ
‘অতঃপর তুমি কোনো সংকল্প গ্রহণ করলে আল্লাহর প্রতি নির্ভর কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ (তাঁর উপর) নির্ভরশীলদের ভালোবাসেন।’ (সুরা ইমরান : আয়াত ১৫৯)
মনে রাখতে হবে
কোনো ভয় ও বিপদে মানুষ হতাশগ্রস্ত হতে পারে না। কোনো কঠিন রোগে আক্রান্ত হলেও সুস্থ হওয়ার ব্যাপারে মহান আল্লাহর ওপর প্রবল ভরসা রাখেতে হবে। নিরাশায় নিজের জীবন বিপন্ন করতে পারে না কোনো মানুষ। আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করা ব্যক্তির মাঝে কখনও আত্মহত্যা কিংবা আত্মঘাতি কোনো কাজের সিদ্ধান্ত আসতে পারে না। কারণ যারা আল্লাহর প্রতি নির্ভরশীল কিংবা ভরসাকারী, আল্লাহ তাআলা তাদের ভালোবাসেন।
৭. মুত্তাকীদের ভালোবাসেন
মুত্তাকি তথা যারা আল্লাহকে ভয় করে চলে আল্লাহ তাআলা ভালোবাসেন। কুরআনুল কারিমে মহান আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন-
بَلٰی مَنۡ اَوۡفٰی بِعَهۡدِهٖ وَ اتَّقٰی فَاِنَّ اللّٰهَ یُحِبُّ الۡمُتَّقِیۡنَ
`অবশ্যই যে তার অঙ্গীকার পালন করে এবং সংযত হয়ে (আল্লাহকে ভয় করে) চলে, নিশ্চয়ই আল্লাহ মুত্তাকিদের ভালবাসেন।’ (সুরা ইমরান : আয়াত ৭৬)
মুত্তাকি মানে কি?
মুত্তাকি হচ্ছে কুরআন-সুন্নাহর ওপর পরিপূর্ণ আমল করা। তাকওয়া মানে হলো- আল্লাহ তাআলা বান্দার গতিবিধির ওপর পরিপূর্ণ নজর রাখছেন। বান্দা কি করছে সবকিছুই রেকর্ড হচ্ছে। বান্দার ছোট-বড় সব কাজই আল্লাহ রেকর্ড করছেন। সব কাজের ব্যাপারেই আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে- এ বিশ্বাসকে অন্তরে রেখে কুরআন-সুন্নাহভিত্তিক জীবন গঠন করাই হলো তাকওয়া। এভাবে তাকওয়া অর্জন করে যে নিজেকে মুত্তাকি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারবে; আল্লাহ তাআলা বলেছেন ওই মুত্তাকি বান্দাকে তিনি ভালোবাসেন।
৮. কোমলতাকে ভালোবাসেন
হাদিসের বর্ণনায় এসেছে, আল্লাহ তাআলা বলেছেন-
যারা কাজে-কর্মে কোমলতা প্রদর্শন করবে, কঠোরতা নয়; (সহকর্মী, আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে) সর্বক্ষেত্রে যার মাঝে বিনয় আছে; আমি আল্লাহ তাআলা তাকে মহব্বত করি, ভালোবাসি।
আর জটিলতা ও কঠিনতা নয় বরং সহজতাকে যে প্রাধান্য দেবে; আমি আল্লাহ তাআলা তাকে মহব্বত করি, ভালোবাসি।’
إن الله يحب الملحين في الدعاء
যে বান্দা প্রতিনিয়ত মুক্তি পেতে আমার কাছে দোয়ার মাঝে মশগুল থাকে; আমি সেই বান্দাকে মহব্বত করি, ভালোবাসি।
মুমিন মুসলমানের উচিত, কুরআন-সুন্নাহ ঘোষিত সবক্ষেত্রে মহান আল্লাহর নির্দেশনা মেনে জীবন পরিচালনা করা। আর এসব কাজের মাধ্যমে আল্লাহর ভালোবাসা পেলে তিনি বান্দাকে ভালোবাসবেন। আল্লাহর ভালোবাসা পেতে হজরত দাউদ আলাইহিস সালামের দোয়াটি বেশি বেশি পড়া। হাদিসে এসেছে-
اَللَّهُمَّ اِنِّىْ أَسْأَلُكَ حُبَّكَ وَ حُبَّ مَنْ يُّحِبُّكَ وَ الْعَمَلَ الَّذِىْ يَبْلُغُنِىْ حُبَّكَ – اَللَّهُمَّ اجْعَلْ حُبَّكَ اَحَبَّ اِلَىَّ مِنْ نَفْسِىْ وَ اَهْلِىْ وَ مِنَ الْمَاءِ الْبَارِدِ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা হুব্বাকা ওয়অ হুব্বা মাইঁ ইউহিব্বুকা ওয়াল আমালাল্লাজি ইয়াবলুগুনি হুব্বাকা আল্লাহুম্মাযআল হুব্বাকা আহাব্বা ইলাইয়্যা মিন নাফসি ওয়া আহলি ওয়া মিনাল মায়িল বারিদি।’ (মিশকাত)
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে তোমার ভালোবাসা লাভের আহ্বান করছি। তোমার সঙ্গে যেন আমার ভালোবাসা হয়ে যায়। তোমাকে যারা ভালোবাসে তাদের সঙ্গেও যেন আমার ভালোবাসা হয়ে যায়। আর যে কাজে তুমি পছন্দ কর সে কাজের সঙ্গে অর্থাৎ তোমার হুকুম-আহকামের সঙ্গে যেন ভালোবাসা হয়ে যায়।’
‘হে আল্লাহ! তোমার ভালোবাসা যেন আমার কাছে আমার নিজের চেয়েও বেশি হয়। আমার পরিবারকে যত বেশি ভালোবাসি তার চেয়েও যেন বেশি হয়। এমনকি ঠাণ্ডা পাণীয় থেকেও যেন তোমার ভালোবাসা আমার কাছে বেশি হয়।’
সুতরাং যারা আল্লাহর ভালোবাসা পাবে দুনিয়াতে তারাই হবে সফল ও কামিয়াবি। তারাই হবে চিন্তামুক্ত ঈমানদার মুসলমান।
Jagonews24 Google News Channelজাগোনিউজের খবর পেতে ফলো করুন আমাদের গুগল নিউজ চ্যানেল।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে আল্লাহর একান্ত ভালোবাসা পেতে কুরআন-সুন্নাহর দিকনির্দেশনাগুলো মেনে চলার তাওফিক দান করুন। নিজেদের জীবনকে সুন্দর ও পরকালের সফলতা পেতে তাঁর রহমতের চাদরে নিজেদের আবৃত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
Chat On WhatsApp
Please Contact with us for more details.
Our Services
WhatsApp :�wa.me/8801933307999
Skype : azadarch
Our Website : www.azadservice.com
Telegram for more information : https://t.me/Azadservice
Email US : [email protected]
Youtube :� https://www.youtube.com/@DropshippingService?sub_confirmation=1
Virtual Assistant : www.azadservice.com/category/virtual-assistant/
Facebook Groups : https://www.facebook.com/groups/854505676275341/
Facebook Page : https://www.facebook.com/independentservice.today
Linkdin :� https://www.linkedin.com/in/azadservice/
Instagram : https://www.instagram.com/azadservicebd/
Pinterest : https://www.pinterest.com/azadservice/
Twitter.: https://twitter.com/azadservicebd
Tiktok : https://www.tiktok.com/@azadservices
+ There are no comments
Add yours